৬ দিন পর রামপাল তাপবিদ্যুৎকেন্দ্রে উৎপাদন শুরু
বিশেষ প্রতিবেদন
রামপাল তাপবিদ্যুৎকেন্দ্রে আর মাত্র ৬ দিন পর ডিসেম্বর মাস থেকেই জাতীয় গ্রিডে বাণিজ্যিকভাবে বিদ্যুৎ সরবরাহের কথা চূড়ান্ত। বাংলাদেশ ও ভারত সরকারের যৌথ বিনিয়োগে রামপাল কয়লাভিত্তিক তাপবিদ্যুৎকেন্দ্রের পরীক্ষামূলক উৎপাদন শুরু হয়েছে।
ন্যাশনাল লোড ডেসপাচের অনুমতিতে ২৫ নভেম্বর রাত ১২ টা এক মিনিট থেকে বিদ্যুৎকেন্দ্রটির প্রথম ইউনিট থেকে বিদ্যুৎ উৎপাদন শুরু হয়। ধাপে ধাপে ইউনিটটির লোড টেস্ট ৬৬০ মেগাওয়াটে পৌঁছানোর চেষ্টা করা হবে।
বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন বাংলাদেশ-ইন্ডিয়া ফ্রেন্ডশিপ পাওয়ার কোম্পানি লিমিটেডের (বিআইএফপিসিএল) উপ-মহাব্যবস্থাপক আনোয়ারুল আজিম। তিনি বলেন, ইতিমধ্যে বিদ্যুৎকেন্দ্রের পরীক্ষামূলক উৎপাদন শুরু হয়েছ। এটি সফল হলে প্রথম ইউনিট বাণিজ্যিক উৎপাদনে যাবে। আর দ্বিতীয় ইউনিটের বাণিজ্যিক উৎপাদন শুরু হবে ২০২৩ সালের জুন মাসে।
জানা গেছে, এর আগে ১৫ আগস্ট প্রথম ইউনিটের পরীক্ষামূলক বিদ্যুৎ উৎপাদন শুরু করা হয়েছিল। তবে ২৪ অক্টোবর বিদ্যুৎ উৎপাদন ৪০০ মেগাওয়াট পর্যন্ত পৌঁছালে ওই এলাকায় আঘাত হানে ঘূর্নিঝড় সিত্রাং। সে সময় ন্যাশনাল লোড ডেসপাচের নির্দেশে উৎপাদন বন্ধ রাখা হয়।
বিদ্যুৎকেন্দ্র-সংশ্লিষ্টরা জানান, কয়েক ধাপে পরীক্ষা-নিরীক্ষার পর জাতীয় কমিটি বাণিজ্যিকভাবে বিদ্যুৎ উৎপাদনের সক্ষমতার সনদ দেবে। সেই সনদ পেলেই বাণিজ্যিক বিদ্যুৎ উৎপাদন শুরু হবে। আগামী ডিসেম্বর মাস থেকেই জাতীয় গ্রিডে বাণিজ্যিকভাবে বিদ্যুৎ সরবরাহের কথা প্রতিষ্ঠানটির। এছাড়াও বিদ্যুৎকেন্দ্রের দ্বিতীয় ইউনিটের সার্বিক কাজের ৮০ ভাগ সম্পন্ন হয়েছে।
দেশের ক্রমবর্ধমান বিদ্যুতের চাহিদা মেটাতে মোংলা-খুলনা মহাসড়কের পাশে বাগেরহাট জেলার রামপাল উপজেলার সাপমারী-কাটাখালী ও কৈর্গদাশকাঠী এলাকায় কয়লাভিত্তিক রামপাল বিদ্যুৎকেন্দ্র নির্মাণের উদ্যোগ নেওয়া হয়। সেই লক্ষ্যে ২০১০ সালের জানুয়ারি মাসে বাংলাদেশ-ভারতের মধ্যে একটি সমঝোতা স্মারক স্বাক্ষর হয়।
এরপর ২০১২ সালের ২৯ জানুয়ারী দুই দেশের রাষ্ট্রায়াত্ত্ব কোম্পানি বিপিডিবি ও এনপিপিসি যৌথ কোম্পানি গঠন করে। ২০১৩ সালের ১ আগস্ট বিদ্যুৎ কেন্দ্রটি পরিবেশ অধিদপ্তরের ছাড়পত্র পায়। ইকুইটি বিনিয়োগ সমান ভাগে ধরে প্রকল্প বাস্তবায়নের জন্য গঠন করা হয় বাংলাদেশ-ইন্ডিয়া ফ্রেন্ডশিপ পাওয়ার কোম্পানি প্রাইভেট লিমিটেড।
১ হাজার ৩২০ মেগাওয়াট উৎপাদন-ক্ষমতার দুটি ইউনিট সংবলিত বিদ্যুৎকেন্দ্রটির নির্মাণ প্রক্রিয়া শুরু হয় ২০১৭ সালের ২৪ এপ্রিল। বর্তমানে এ প্রকল্পটি ভৌত কাজের অগ্রগতি হয়েছে প্রায় ৯০ শতাংশ।